এই সপ্তাহের ফিন্যান্সিয়াল টার্ম- বিয়ার মার্কেট
বিয়ার মার্কেট বলতে বোঝায় যখন ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট সিকিউরিটির মূল্যে নিরন্তর হ্রাস পেতে থাকে. এটি সাধারণত স্টক সংক্রান্ত ব্যবহার করা হয় কিন্তু এটি যে কোনও ধরনের সিকিউরিটি যেমন বন্ড বা এমনকি রিয়েল এস্টেটের জন্য প্রযোজ্য হতে পারে. বিয়ার মার্কেট পরিস্থিতি টানা কয়েক বছর ধরে চলতে পারে এবং এর মাধ্যমে মার্কেটের শর্ট-টার্ম ওঠাপড়া বোঝানো হয় না.
বিয়ার মার্কেট সম্পর্কে আরও জানুন
যখন বাজার বিয়ারিশ হয়, তখন বিনিয়োগকারীদের ভাবনা নেতিবাচক হয়ে যায়, এবং কোম্পানিগুলি বিস্তার বা বৃদ্ধি করার পর্যায়ে থাকে না. বিয়ারিশ মার্কেটে কোনও লাভ দেখা যায় না; আবার লাভ বজায় রাখা যায় না. বিয়ার মার্কেট পর্যায়ক্রমে আসতে পারে বা দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে; প্রথমটি হলে এর স্থায়িত্ব কয়েক সপ্তাহ/মাস পর্যন্ত হতে পারে, তবে যদি দীর্ঘমেয়াদী হয় তাহলে এই পর্যায় বেশ কয়েক বছর স্থায়ী হতে পারে. এর পিছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে যেমন মন্দা বা অর্থনৈতিক দুরবস্থা, এগুলির জন্য একাধিক কারণ দায়ী হতে পারে. স্টকের সরবরাহ তাদের চাহিদার তুলনায় বেশি হয়ে যায়. এই পর্যায়ে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে যে কেউ সন্দিহান হয়ে উঠতে পারেন, এবং অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতির হাত থেকে বিনিয়োগ করা টাকার পরিমাণ বাঁচানোর জন্য অনেকে তৎপর হয়ে উঠতে পারেন. বিনিয়োগকারীরা এই সময়ে বিশেষ ঝুঁকি নিতে চান না.
তবে, বিয়ার মার্কেট এবং মার্কেট কারেকশান হল মার্কেট সম্পর্কিত সম্পূর্ণ ভিন্ন দুইটি পর্যায় বা ফেজ এবং এগুলি গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়. বিয়ার মার্কেটের তুলনায় মার্কেট কারেকশান অনেক কম সময়ের জন্য স্থায়ী হতে পারে. বিনিয়োগকারীদের পক্ষে কোনও বিয়ার মার্কেটে সর্বনিম্ন ফেজ খুঁজে বের করা খুব কঠিন হতে পারে, এটি পরবর্তী বিনিয়োগের আদর্শ সময় হতে পারে. তবে, একটি মার্কেট কারেকশান পরিস্থিতিতে, বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগ করার জন্য উপযুক্ত সময় সহজেই খুঁজে পেতে পারেন.
বিয়ার মার্কেটের বিপরীত অবস্থা হল বুল মার্কেট, যখন স্টকের মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকে, এবং দেশের অর্থনীতি সামগ্রিক ভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে. -.
মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে এর অর্থ কী?
যেহেতু ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ড স্টক মার্কেটের উপর নির্ভরশীল, তাই বিয়ার ফেজ মিউচুয়াল ফান্ডকে প্রভাবিত করে. যখন স্টকের মূল্য কম হয়, তখন নেট অ্যাসেট ভ্যালু (এনএভি), যাকে মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমের প্রতি ইউনিট খরচ বলা হয়, তা-ও কম হয়ে যায়; এবং বিপরীত ক্ষেত্রেও বিষয়টি এক থাকে.
প্রায়শই দেখা যায়, যখন বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের মূল্য কমে যায়, তখন তাঁরা রিডিম করিয়ে নেন. এর দুটি দিক রয়েছে. প্রথমটি হল, ফিন্যান্সিয়াল মার্কেটে কোনও পর্যায় বা ফেজ চিরস্থায়ী নয়. যদি আপনি বর্তমানে কোনও বিয়ার ফেজ প্রত্যক্ষ করে থাকেন, তাহলে পূর্বের ইতিহাস প্রমাণ করে যে এই খারাপ সময়েও চলে যাবে এবং তার পরে একটি বুল ফেজ আসবে. তবে কতদিনে এই পরিবর্তন আসবে তা অনুমান করা কঠিন. দ্বিতীয়ত, যখন আপনি কোনও বিয়ার ফেজে ফান্ড রিডিম করবেন, তখন আপনার অনেকটাই ক্ষতি হবে কারণ আপনার মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা স্টকগুলির মূল্য অনেকাংশে কমে গিয়েছে. তাই যতক্ষণ না আপনার বিনিয়োগের লক্ষ্যের সাথে ফান্ডে বিনিয়োগের উদ্দেশ্য মিলে না যায়, ততক্ষণ বিনিয়োগ বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে. প্রকৃতপক্ষে, বহু বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দেন যে এমন পরিস্থিতিতে বাজারে আরও টাকা বিনিয়োগ করা উচিত. কারণ আপনি সেই একই ইউনিট গড় এনএভি-এর তুলনায় অনেক কম এনএভি দিয়ে কিনতে পারবেন. এছাড়াও, এই সময়ে আপনার এসআইপি (সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান) বন্ধ রাখলে বা সাময়িক বিরতি নিলে, তা খুব একটা ফলপ্রসূ হবে না, বরং এই সময়ে আপনার আরও বেশি সংখ্যক ইউনিট কিনে নেওয়া উচিত.