কম লোকসান করা হল দারুণ রিটার্ন পাওয়ার মতোই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটে বিনিয়োগ করার প্রক্রিয়াটির সাথে উত্থান-পতন ওতপ্রোতভাবে জড়িত. আপনি
বিনিয়োগের বিকল্প-এর মধ্যে থেকে যা-ই বেছে নিন না থেকে, আপনাকে অবশ্যই উচ্চ রিটার্নের জন্য ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা রাখতে হবে. ঝুঁকির উপাদানগুলি আপনার বিনিয়োগগুলি বিচক্ষণ ভাবে এবং সাবধানে পরিকল্পনা করার কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে.
বহু বিনিয়োগকারীই প্যানিক সেলিং করেন, কারণ তাঁদের বিনিয়োগের মূল্য কমে যেতে দেখলে তাঁরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন. এবং তাঁরা যদি দ্রুত অর্থ উপার্জনের জন্য কোনও চিন্তা-ভাবনা না করেই যে কোনও সিকিউরিটি বেছে নেন, তবে তাঁদের আতঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণও আছে. কিন্তু তাঁদের যদি নিজেদের পছন্দের উপর দৃঢ় বিশ্বাস থাকে এবং তারা যদি লং-টার্মের জন্য বিনিয়োগ করেন, তাহলে তাঁদের মনে রাখতে হবে যে লোকসান হল ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটে বিনিয়োগ করার একটি অংশ.
এই পর্যবেক্ষণ যা-ই বলুক না কেন, তার মানে এই নয় যে লোকসান হলেও সেই বিষয়টি আপনাকে প্রভাবিত করবে না. আমরা সকলেই ভুল করতে পারি, কিন্তু আমরা যদি সেগুলি স্বীকার করি এবং সংশোধন করি তবে তা আমাদের জন্য ভালো হবে. এই পরামর্শটি জীবনে অনুসরণ করা কঠিন হতে পারে, কিন্তু ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটে আমাদের ভুলগুলি সংশোধন করা খুব একটা কঠিন নয়.
বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কম লোকসান করার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ
বিনিয়োগের বিকল্পের ক্ষেত্রে অস্থিরতা বা অন্তর্নিহিত ঝুঁকি ভিন্ন রকমের হয়. এই বিষয়টি একাধিক অ্যাসেট ক্লাসের পাশাপাশি একটি অ্যাসেট ক্লাসের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রেও সত্য. উদাহরণস্বরূপ, বন্ডের চেয়ে স্টক-কে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং সমস্ত ইক্যুইটির মধ্যে, লার্জ-ক্যাপ কাউন্টারপার্টের তুলনায় স্মল-ক্যাপ স্টক অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে বিবেচনা করা হয়. যখন তাদের ঝুঁকি আমাদের পক্ষে থাকে, অর্থাৎ আমাদের বিনিয়োগ লাভের মুখে দেখতে থাকে, তখন আমরা এটা নিয়ে কোনও প্রশ্ন করি না এবং আমাদের নির্বাচন নিয়ে আনন্দিত থাকি. কিন্তু যখন এটি আমাদের বিপক্ষে যায় তখন আমরা অস্থির হয়ে উঠি. আমাদের দুশ্চিন্তা কমানোর জন্য এমন একটি বিনিয়োগ বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, যারা লাভ করার এবং লোকসানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার উপায় জানে.
একটি উদাহরণ দেখে নেওয়া যাক: নিম্নলিখিত স্টকগুলির মধ্যে থেকে আপনি কোনটি বেছে নেবেন? মার্কেট যখন ঊর্ধ্বমুখী থাকে তখন স্টক এ 45% লাভ করে এবং কিন্তু পতনের ক্ষেত্রে 40% হ্রাস পায়. একইসাথে, ঊর্ধ্বমুখী মার্কেটে স্টক বি 38% বৃদ্ধি পায় এবং নিম্নমুখী মার্কেটে 28% হ্রাস পায়. আমরা সকলেই 45% রিটার্ন উপভোগ করতে চাই যা 38%-এর থেকে অনেক বেশি, কিন্তু তারপরও স্টক বি প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত কারণ এটির পতন স্টক এ-এর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে অনেক কম. তাই মার্কেটের অন্যান্য ক্ষেত্রে মতো যদি এখানে পতন হয়, তাহলে এটি স্টক এ-এর তুলনায় অনেক ভালো ভাবে ক্যাপিটাল সংরক্ষণ করতে পারবে.
আসুন সংখ্যা ব্যবহার করে আমাদের উদাহরণটি দেখা নেওয়া যাক. যদি আমরা উভয় স্টকেই ₹10,000 করে বিনিয়োগ করে থাকি, তাহলে প্রদত্ত শতাংশ অনুযায়ী বৃদ্ধি এবং পতন হওয়ার পরে, স্টক এ-তে আমাদের টাকা কমে হবে ₹8,700, কিন্তু স্টক বি-তে কমে গিয়ে তা হবে ₹9,936. লোকসানের পরিমাণ কম হওয়ার কারণে স্টক বি অধিক পরিমাণ ক্যাপিটাল সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিল. সুতরাং, মার্কেট যখন আবার ঊর্ধ্বমুখী হবে, তখন স্টক এ-তে আপনার করা বিনিয়োগের তুলনায় স্টক বি-তে বিনিয়োগ করা আপনার টাকা বেড়ে যাওয়ার সুযোগ বেশি থাকবে.
পতন রোধ করা
উপরের উদাহরণ থেকে আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে, আপনার বিনিয়োগ করা টাকা বাড়তে দেখার চেয়ে তা রক্ষা করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ. এই জ্ঞানের সাহায্যে আপনি আপনার পছন্দের সিকিউরিটি বেছে নিতে পারেন যা আপনার পোর্টফোলিওকে কেবল ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের একটি নির্দিষ্ট পতন রোধ করতেই সাহায্য করে না বরং পতনকে সীমিত করতেও সাহায্য করতে পারে, যাতে মার্কেট আবার উপরের দিকে ওঠা শুরু হলে এগুলি আরও বেশি সুবিধা পেতে পারে.
আপনার কাছে বেছে নেওয়ার জন্য বিনিয়োগের বিভিন্ন বিকল্প রয়েছে এবং
মিউচুয়াল ফান্ড হল একটি অসাধারণ বিকল্প. এগুলি আপনার পোর্টফোলিওকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডাইভার্সিফাই করে তোলে, যা এই পোর্টফোলিওকে পৃথক পৃথক স্টক হোল্ডিংয়ের তুলনায় আরও ভালো ভাবে পতনের মোকাবিলা করার জন্য তৈরি করে. বিভিন্ন স্ট্র্যাটেজি অফার করা এবং বিভিন্ন মার্কেট সেগমেন্টে বিনিয়োগ করা মিউচুয়াল ফান্ডের একটি কম্বিনেশন আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারে. তাই এগিয়ে যান এবং আপনার লোকসান সীমাবদ্ধ করুন.