এই সপ্তাহের ফিন্যান্সিয়াল টার্ম- পোর্টফোলিও রিব্যালেন্সিং
আপনার মিউচুয়াল ফান্ড পোর্টফোলিও রিব্যালেন্স করার সময়ে নিশ্চিত ভাবে আপনার পছন্দসই অ্যাসেট অ্যালোকেশন মেনে চলুন. বিভিন্ন ধরনের অ্যাসেট ক্লাস ইক্যুইটি, ডেট, গোল্ড, রিয়েল এস্টেট এবং এমন অন্যান্য; এবং এই প্রতিটির সাথে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি সংযুক্ত থাকে. আপনার অ্যাসেট অ্যালোকেশনের অর্থ হল, আপনার প্রত্যাশিত রিটার্ন এবং ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতার উপরে ভিত্তি করে আপনি এই প্রতিটি বা কোনও এক প্রকার অ্যাসেটে যে পরিমাণ বিনিয়োগ করবেন. উদাহরণস্বরূপ, আপনি ইক্যুইটি, ডেট এবং গোল্ডে যথাক্রমে 50:30:20 হারে অ্যাসেট অ্যালোকেশন করতে পারেন. এখন, আপনি এই অ্যাসেট অ্যালোকেশন-এর মাধ্যমে শুরু করতে পারেন, কিন্তু সময়ের সাথে, মার্কেটের ওঠাপড়া অনুযায়ী আপনার বিনিয়োগের মূল্য বৃদ্ধি বা হ্রাস পেতে পারে. এর ফলে আপনার অ্যাসেট অ্যালোকেশন-এর ব্যালেন্স বিঘ্নিত হতে পারে, হয়তো তা হয়ে গেল 55:20:25 পোর্টফোলিও রিব্যালেন্সিং হল আপনার অ্যাসেট অ্যালোকেশন মূল 50:30:20 হারে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া.
একটি ভারসাম্যযুক্ত পোর্টফোলিও কেন প্রয়োজন?
যে কোনও একটি অ্যাসেট ক্লাসে বিনিয়োগ করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ সেটি প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে না পারলে আপনি বিনিয়োগ করা সমস্ত টাকা হারাবেন. আপনি বিভিন্ন অ্যাসেট ক্লাসে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে এই ঝুঁকি হ্রাস করতে পারেন. কোন অ্যাসেট ক্লাসে আপনার কর্পাসের কতটা অংশ বিনিয়োগ করা উচিত তা সঠিক অ্যাসেট অ্যালোকেশন কৌশল মেনে নির্ধারণ করা উচিত.
অ্যাসেট অ্যালোকেশন করার মাধ্য়মে আপনি লাভবান হতে পারেন কারণ প্রতিটি অ্যাসেট ক্লাস ভিন্ন ভাবে পারফর্ম করে; এর অর্থ হল এগুলির মধ্যে কোনও একটি অপরটির তুলনায় কম পারফর্ম করতে পারে বা উল্টোটাও হতে পারে - ঠিক গোল্ড এবং ইক্যুইটির মতো. সুতরাং, আপনি যদি এই দুটি ক্লাসে বিনিয়োগ করে থাকেন তাহলে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন, কারণ আপনি জানেন যে পোর্টফোলিও-তে ব্যালেন্স বজায় রয়েছে. আপনার ভবিষ্যতের রিটার্ন নিশ্চিত করা এবং ঝুঁকি হ্রাস করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হওয়ার পাশাপাশি, ডাইভার্সিফিকেশন বজায় রাখার জন্যও অ্যাসেট অ্যালোকেশন করা জরুরি. যদি আপনার লক্ষ্য হয় দীর্ঘমেয়াদী সম্পদ সৃষ্টি করা, তাহলে অ্যাসেট অ্যালোকেশন আপনার এই যাত্রায় সাফল্যের চাবিকাঠি হতে পারে.
পোর্টফোলিও রিব্যালেন্স করার প্রয়োজনীয়তা
ধরুন, আপনার কাছে ₹1,00,000 আছে এবং আপনার ঝুঁকির ক্ষমতা অনুযায়ী আপনি ইক্যুইটি ফান্ডে (60%) অর্থাৎ ₹60,000 এবং ডেট মিউচুয়াল ফান্ডে (40%) অর্থাৎ ₹40,000 বিনিয়োগ করেছেন. এখন নির্দিষ্ট কিছু সময় পরে, ধরা যাক 10 বছর পরে, সেই ইক্যুইটি ফান্ডের মূল্য ₹62,000 হয়ে গেছে, এবং ডেট মিউচুয়াল ফান্ডের মূল্য মাত্র ₹45,000 হয়েছে. এখন বিষয়গুলির বর্তমান স্কিমে, ইক্যুইটি এবং ঋণ তহবিলের বরাদ্দ যথাক্রমে 58% এবং 42 % হয়ে উঠেছে.
সুতরাং, আপনি এখন ডেট ফান্ডে আরও বেশি লাভ আশা করতে পারেন এবং ইক্যুইটি-তে বরাদ্দ বাড়াতে পারেন যাতে আপনার অ্যালোকেশন অনুপাত পুনরায় 60:40 হয়ে যায়.
পোর্টফোলিও রিব্যালেন্সিং-এর জন্য আপনাকে নজর রাখতে হবে এবং প্রতি কয়েক বছর অন্তর চেক করতে হবে যে আপনার অ্যাসেট অ্যালোকেশন আপনার প্রাথমিক কৌশল অনুযায়ী সঠিক রয়েছে কি না. রিব্যালেন্সিং আপনার ঝুঁকির ক্ষমতা অনুযায়ী আপনাকে ঝুঁকি গ্রহণ করতে সাহায্য করে. যদি আপনার ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা পরিবর্তিত হয়, তাহলে আপনার অ্যাসেট অ্যালোকেশন পরিবর্তন করা যেতে পারে এবং আপনি অন্য একটি রিব্যালেন্সিং রুট গ্রহণ করতে পারেন. সম্পদ বরাদ্দের স্থিতি যাচাই করার জন্য এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে আপনি আপনার পোর্টফোলিও সময়মত রিভিউ করতে পারেন.
পোর্টফোলিও রিব্যালেন্সিং-এর আর্থিক প্রভাব
উপরের উদাহরণে দেখা যাচ্ছে, নতুন পোর্টফোলিও-র মূল্য হয়েছে ₹1,07,000 এবং সেটি রিব্যালেন্স করার জন্য, আপনাকে ডেট মিউচুয়াল ফান্ড থেকে ₹2200 রিডিম করতে হবে এবং সেটি ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডে পুনরায় বিনিয়োগ করতে হবে, যাতে অ্যালোকেশন-এর অনুপাত আবার 60:40 হয়ে যায়. কিন্তু এই টাকা রিডিম করার সময়ে চার্জ প্রযোজ্য হবে, সেটা আপনাকে মনে রাখতে হবে-
- এক্সিট লোড: যদি আপনি একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রিডিম করেন, তাহলে আপনার রিডেমশানের উপরে এক্সিট লোড ধার্য করা হতে পারে. এর পরিমাণ ভিন্ন ফান্ডের ক্ষেত্রে বিভিন্ন হয়.
- ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স: আবার, আপনার বিনিয়োগের সময়সীমার উপর নির্ভর করে, আপনার বিনিয়োগের মাধ্যমে আয় করা মোট পরিমাণের উপরে শর্ট-টার্ম ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স অথবা লং-টার্ম ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স প্রযোজ্য হতে পারে
আপনার পোর্টফোলিওতে আপনি যে অ্যাডজাস্টমেন্ট করেছেন তা অবশ্যই বুঝেশুনে করতে হবে, এই চার্জগুলির কথাও মনে রাখতে হবে. আপনি যে টাকা রিডিম করছেন তার কারণে যে আর্থিক প্রভাব উদ্ভূত হতে পারে তা হ্রাস করার চেষ্টা করুন. আপনি বাকিদের চেয়ে আলাদা এবং তাই আপনার অ্যাসেট অ্যালোকেশন সম্পর্কিত সিদ্ধান্তও আলাদা হবে. অন্য কারও কৌশল অনুসরণ করার পরিবর্তে, আপনার নিজের উপযোগী কৌশল বানালে ভালো ফল পাবেন.